জার্নি টু ভাইরাস: পর্ব ০১
‘নাহ্। আজ আংকেলকে জিজ্ঞেস করতেই হবে। না হলে যে আমার পেটের ভাত হজমই হবে না’।
আসলেই রাহাতের পেটের ভাত হজম হচ্ছে না। ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে বেচারা বিরাট কষ্টে আছে। ওর আসলে এ ব্যাপারে তেমন কোন দোষ নেই। যত ভজঘটের শুরু ‘কিন্তু’ থেকে আর এ সবের জন্য দায়ী ওর গোবেচারা বৈজ্ঞানিক মনটা। আসে পাশে কিছু ঘটলেই হলো! রাহাত সে ঘটনার হাড়িঁর ভেতর না যাওয়া পর্যণ্ত স্বস্থি পায় না। ‘কিন্তু’ সেটা কেন হলো, ‘কিন্তু’ কি করে হলো, ‘কিন্তু’ এভাবে না হয়ে ওভাবে হলো না কেন? যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন উত্তরে খুশি হয়, ততক্ষণ এই রকম হাজার প্রশ্ন করতেই থাকবে। কিন্তু রাহাতের বাসায় রাহাতের অবস্থা হলো ইয়া বড় ট্রাকের মতো। মানে ট্রাকের পেছনটায় দেখেছো না যেমন লেখা থাকে, ‘নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করুন’। তেমনি রাহাতকে দেখলে ওর ভাইয়া, আপু, আব্বু-আম্মু ওর প্রশ্নের ভয়ে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে। অবশ্য রাহাত এতে মোটেই হতাশ হয় না। ইতিমধ্যে ক্লাসে ও খুঁদে সায়েন্টিস্ট নামে খ্যাত হয়ে গেছে। আর ওদিকে যত ঝামেলা হলো আমার। ও যত এক্সপেরিমেন্ট করে তার প্রথম শিকার হই আমি। ওর প্রশ্ন আর উত্তর দু’টোই আমাকে শুনতে হয়। অবশ্য বিজ্ঞান আমার কাছেও খুব মজার মনে হয়। আর একারণেই রাহাতের কোটি কোটি প্রশ্নের যন্ত্রণার পরেও ওই আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
কয়েকদিন হলো রাহাতের জ্বর হয়েছে। অন্য কেউ হলে কি করতো? শুয়ে শুয়ে ঔষুদ খেতো আর ঘুমাতো। আর রাহাত.....জ্বর কেন হলো? কিভাবে হলো? জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা কেন বাড়ে? কিসের জন্য জ্বর হয়? বিড়ালের জ্বর হলে তাপমাত্রা কত বাড়ে? মুরগীর কি জ্বর হলে মাথা ব্যাথা করে কিনা?............আরে বাবা তোর জ্বর হয়েছে শুয়ে কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমাবি, তা না করে হাজারটা প্রশ্ন। ওফ্....
-কিরে কি ভাবছিস?
- কই?
হঠাৎ ভাবনায় ছেঁদ পড়লো সাইমুমের। ‘কি যেন বলছিলি?’
- আরে ধ্যাৎ, এতো ভুলো মন হলে কি তুই সায়েন্টিস্ট হতে পারবি নাকি?
- আমি সায়েন্টিস্ট হবো কোন দু:খে?
- আমার দু:খে। আরে, সায়েন্টিস্ট না হ, আমার সহকারী তো তোকে হতেই হবে। না হলে আমি এক্সপেরিমেন্ট করবো কার উপর? আর সে জন্যও তোকে এতোটা ভুলো মন হলে হবে না।
ওদের কথার মাঝখানেই আংকেলের প্রবেশ। ওদের প্রিয় ডাক্তার আংকেল। অবশ্য তিনি এমনি এমনি ওদের প্রিয় হননি। ডাক্তার আংকেল মানেই হলো ওদের জন্য এত্তো এত্তো লেখার প্যাড, গিফট, আর মজার মজার গল্প।
- কিহে, খুঁদে সায়েন্টিস্টরা। কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে?
- আর বলোনা আংকেল। সবাই কি সুন্দর মাঠে ফুটবল খেলছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমি কিনা জ্বর নিয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ইয়া বড় বড় ট্যবলেট খাচ্ছি।
- আরে এতো চিন্তা করছো কেন? ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে তুমিও ওদের সাথে ফুটবল
খেলবে।
- আংকেল, রাহাত আজ সারাদিন তোমাকে একটা প্রশ্ন করার জন্য উশখুস করছে।
- আরে সায়েন্টিস্ট প্রশ্ন করবে নাতো কে করবে? করে ফেলো।
- তুমি সেদিন বলেছিলে আমার জ্বর হয়েছে ভাইরাসের জন্য। আমি তো সারাদিন ভেবেই অস্থির। ভাইরাস তো হয় কম্পিউটারে। ওটা আমার শরীরে কি করে এলো?
- আরে হ্যা। সেদিন পেনড্রাইভে করে মারুফ মামার কম্পিউটারে ভাইরাস এ্যটাক করেছিলো। ওনার ডাটা সব একেবারে গায়েব করে দিয়েছিলো।
-তাহলে সেটা আমার মধ্যে কি করে এলো? আমি কি আমার গায়ে পেনড্রাইভ লাগিয়েছি নাকি? আচ্ছা আংকেল সেটা আমাকেও গায়েব করে দিবে নাতো?
- হা হা হা............আরে তোমার দেখছি একেবারে জটিল একটা ফ্যান্টাসি বানিয়ে ফেলছো। শোন শোন, এটা সে ভাইরাস না। দু’টো পুরোপুরি আলাদা জিনিস। তবে দু’টোতে অনেক মিলও আছে।
- ওমা। এ কি বলছো আংকেল। একটা হয় মেশিনে, আরেকটা হয় মানুষে। তাহলে মিল হয় কি করে?
-শোন, দু’টোই প্রায় সবসময় মানুষের ক্ষতি করে। তাহলে এটা কি ওদের মধ্যে বিরাট একটা মিল না?
-হুম। আংকের আমি কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে একটু আধটু জানি। কিন্তু আমার জ্বর ঘটালো যে ভাইরাস, সেটা সম্পর্কে আমিতো একেবারেই কিছু জানি না।
-আমিও না।
-তাহলে আংকেল তুমি ওটা সম্পর্কে আমাদের বলো। আমরা ওটা সম্পর্কে জানতে চাই।
-কি জানতে চাও?
-এই যেমন, ওটা কি করে, কি খায়, দেখতে কেমন, কিভাবে মানুষের রোগ বানায় এই সব।
-হুম। তাহলে তো খুবই মজা হয়।
-জ্বি আংকেল প্লিজ বলো। আমিও শুনবো।
-আজ তো বেশি সময় নেই। আজ শুধু তোমাদের কিছু মজার তথ্য দেবো ভাইরাস সম্পর্কে। শোন, এটা হলো সৃষ্টিকর্তার তৈরী এই মহাবিশ্বের অসংখ্য সৃষ্টির মধ্যে অন্যতম ক্ষুদ্র একটি সৃষ্টি। এটা কতটা ক্ষুদ্র তোমরা কি ধারণা করতে পারো?
-নাহ। যত ক্ষুদ্রই হোক, দেখার মতো হলে তো আমি অনেক আগেই দেখতাম।
-আচ্ছা আংকেল, আমাদের ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে কি ওটা দেখা যাবে?
-হা হা হা, ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে? উহু। আচ্ছা, তোমরা তো অনুবীক্ষণ যন্ত্রের কথা –শুনেছো, তাই না?
-কোনটা যেন?
-আরে গাঁধা যেটা দিয়ে অনেক ছোট জিনিস অনেক বড় করে দেখা যায়।
-হ্যা, এবার চিনেছি।
- মজার বিষয় হলো, ভাইরাসকে দেখার জন্য অনেক অনেক শক্তিশালী একটা অনুবীক্ষণ যন্ত্র তোমার দরকার হবে। ভাইরাস হলো অনেকটা এমন, তুমি এই পৃথিবীর তুলনায় যতটা ছোট, একটা ভাইরাস তোমার শরীরের তুলনায় ঠিক ততটাই ছোট। তুমি এই বিশাল পৃথিবীটাকে যত বড় দেখো, ভাইরাস যখন তোমাকে আক্রমন করে, সেও তোমাকে ঠিক ততটাই বিশাল দেখে।
-ইয়া আল্লাহ, কি বলো আংকেল? সত্যি।
-হ্যা, সত্যি।
-আর কি কি করে ওরা?
-উহু। আজ আর বলবো না। বাকিটা আগামী দিন বলবো। তবে শর্ত আছে।
-কেন? কি শর্ত? না না। আজকেই বলো আংকেল, প্লিজ।
-উহু, আগে শর্ত। প্রথম শর্ত, রাহাত ঠিক ঠিক ঔষুধ খাবে এবং বিশ্রাম করবে। নো দুষ্টুমি, নো গেমস। আম্মু যা যা বলবে তাই শুনবে। আর সাইমুম, স্কুলের হোম ওয়ার্ক কোনটা বাদ রাখা চলবে না। তোমার ছোট বোন রাইসাকে একদম বিরক্ত করা যাবে না। মোটেই ওর চুল টানা যাবে না। এখন বলো, তোমরা শর্তে রাজি কিনা? তাহলে কাল থেকে আমরা শুরু করবো ভাইরাসের রাজ্যে আমাদের অভিযান। ভাইরাসের যত বিস্ময়কর কথা, রহস্য আছে, আমরা সেটা আবিস্কার করবো। শুরু হবে আমাদের তিন জনের মিশন, ‘জার্নি টু ভাইরাস’। বলো, তোমরা কি অভিযানের জন্য প্রস্তুত?
-প্রস্তুত।
-উহু, মাই ডিয়ার খুঁদে সায়েন্টিস্টরা। শর্ত মানা হলে তবেই কেবল অভিযার শুরু হবে। আগে নয়।
রাহাতের জন্য গেমস্ খেলতে না পারা ছিল একটা ভয়াবহ ব্যাপার। ওকে খেতে না দিলে ও আপত্তি করবে না, কিন্তু গেমস ছাড়া একটা দিন.....! আর সাইমুম কখনোই ভাবেনি যে ওর জীবনে এমন একটা দিন আসবে যেদিন ও ওর ছোটবোনের চুলে গিট্টু মেরে দিতে পারবে না। ও ভাবতো ও যদি কখনো বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টও হয়ে যায়, তবুও ওর রুটিন ওর্য়াক থেকে এই কাজটা বাদ যাবে না। কিন্তু আংকেল........।
ওদের দু’জনের জন্যই শর্তগুলো ছিলো সাংঘাতিক কঠিন। কিন্তু ওরা রহস্যময় ভাইরাস সম্পর্কে জানার জন্য এতোটাই আগ্রহী ছিলো যে, সেটা আর বলার মত নয়। তাই ওরা আংকেলের শর্তগুলো মানতে তক্ষুণিই রাজি হয়ে গেলো। এই ঘটনা ওদের ক্লাসের বন্ধুরা জানলে কি হবে জানো? বাজি ধরে বলতে পারি, মহাবিজ্ঞানী নিউটনের মাথায় আপেল পড়ার পড় উনি যতটা অবাক হয়েছিলেন, ওরা তার থেকেও বেশি অবাক হবে। যাই হোক, ভাইরাসের রাজ্যে অভিযানে ওরা একপাড়ে খাড়া। হাতের তালুতে কিল মেরে দু’জনেই বল্লো, নো প্রবলেম আংকেল। কাল থেকে শুরু হবে আমাদের অপারেশন, ‘জার্নি টু ভাইরাস’।
আসলেই রাহাতের পেটের ভাত হজম হচ্ছে না। ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে বেচারা বিরাট কষ্টে আছে। ওর আসলে এ ব্যাপারে তেমন কোন দোষ নেই। যত ভজঘটের শুরু ‘কিন্তু’ থেকে আর এ সবের জন্য দায়ী ওর গোবেচারা বৈজ্ঞানিক মনটা। আসে পাশে কিছু ঘটলেই হলো! রাহাত সে ঘটনার হাড়িঁর ভেতর না যাওয়া পর্যণ্ত স্বস্থি পায় না। ‘কিন্তু’ সেটা কেন হলো, ‘কিন্তু’ কি করে হলো, ‘কিন্তু’ এভাবে না হয়ে ওভাবে হলো না কেন? যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন উত্তরে খুশি হয়, ততক্ষণ এই রকম হাজার প্রশ্ন করতেই থাকবে। কিন্তু রাহাতের বাসায় রাহাতের অবস্থা হলো ইয়া বড় ট্রাকের মতো। মানে ট্রাকের পেছনটায় দেখেছো না যেমন লেখা থাকে, ‘নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করুন’। তেমনি রাহাতকে দেখলে ওর ভাইয়া, আপু, আব্বু-আম্মু ওর প্রশ্নের ভয়ে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে। অবশ্য রাহাত এতে মোটেই হতাশ হয় না। ইতিমধ্যে ক্লাসে ও খুঁদে সায়েন্টিস্ট নামে খ্যাত হয়ে গেছে। আর ওদিকে যত ঝামেলা হলো আমার। ও যত এক্সপেরিমেন্ট করে তার প্রথম শিকার হই আমি। ওর প্রশ্ন আর উত্তর দু’টোই আমাকে শুনতে হয়। অবশ্য বিজ্ঞান আমার কাছেও খুব মজার মনে হয়। আর একারণেই রাহাতের কোটি কোটি প্রশ্নের যন্ত্রণার পরেও ওই আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
কয়েকদিন হলো রাহাতের জ্বর হয়েছে। অন্য কেউ হলে কি করতো? শুয়ে শুয়ে ঔষুদ খেতো আর ঘুমাতো। আর রাহাত.....জ্বর কেন হলো? কিভাবে হলো? জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা কেন বাড়ে? কিসের জন্য জ্বর হয়? বিড়ালের জ্বর হলে তাপমাত্রা কত বাড়ে? মুরগীর কি জ্বর হলে মাথা ব্যাথা করে কিনা?............আরে বাবা তোর জ্বর হয়েছে শুয়ে কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমাবি, তা না করে হাজারটা প্রশ্ন। ওফ্....
-কিরে কি ভাবছিস?
- কই?
হঠাৎ ভাবনায় ছেঁদ পড়লো সাইমুমের। ‘কি যেন বলছিলি?’
- আরে ধ্যাৎ, এতো ভুলো মন হলে কি তুই সায়েন্টিস্ট হতে পারবি নাকি?
- আমি সায়েন্টিস্ট হবো কোন দু:খে?
- আমার দু:খে। আরে, সায়েন্টিস্ট না হ, আমার সহকারী তো তোকে হতেই হবে। না হলে আমি এক্সপেরিমেন্ট করবো কার উপর? আর সে জন্যও তোকে এতোটা ভুলো মন হলে হবে না।
ওদের কথার মাঝখানেই আংকেলের প্রবেশ। ওদের প্রিয় ডাক্তার আংকেল। অবশ্য তিনি এমনি এমনি ওদের প্রিয় হননি। ডাক্তার আংকেল মানেই হলো ওদের জন্য এত্তো এত্তো লেখার প্যাড, গিফট, আর মজার মজার গল্প।
- কিহে, খুঁদে সায়েন্টিস্টরা। কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে?
- আর বলোনা আংকেল। সবাই কি সুন্দর মাঠে ফুটবল খেলছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমি কিনা জ্বর নিয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ইয়া বড় বড় ট্যবলেট খাচ্ছি।
- আরে এতো চিন্তা করছো কেন? ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে তুমিও ওদের সাথে ফুটবল
খেলবে।
- আংকেল, রাহাত আজ সারাদিন তোমাকে একটা প্রশ্ন করার জন্য উশখুস করছে।
- আরে সায়েন্টিস্ট প্রশ্ন করবে নাতো কে করবে? করে ফেলো।
- তুমি সেদিন বলেছিলে আমার জ্বর হয়েছে ভাইরাসের জন্য। আমি তো সারাদিন ভেবেই অস্থির। ভাইরাস তো হয় কম্পিউটারে। ওটা আমার শরীরে কি করে এলো?
- আরে হ্যা। সেদিন পেনড্রাইভে করে মারুফ মামার কম্পিউটারে ভাইরাস এ্যটাক করেছিলো। ওনার ডাটা সব একেবারে গায়েব করে দিয়েছিলো।
-তাহলে সেটা আমার মধ্যে কি করে এলো? আমি কি আমার গায়ে পেনড্রাইভ লাগিয়েছি নাকি? আচ্ছা আংকেল সেটা আমাকেও গায়েব করে দিবে নাতো?
- হা হা হা............আরে তোমার দেখছি একেবারে জটিল একটা ফ্যান্টাসি বানিয়ে ফেলছো। শোন শোন, এটা সে ভাইরাস না। দু’টো পুরোপুরি আলাদা জিনিস। তবে দু’টোতে অনেক মিলও আছে।
- ওমা। এ কি বলছো আংকেল। একটা হয় মেশিনে, আরেকটা হয় মানুষে। তাহলে মিল হয় কি করে?
-শোন, দু’টোই প্রায় সবসময় মানুষের ক্ষতি করে। তাহলে এটা কি ওদের মধ্যে বিরাট একটা মিল না?
-হুম। আংকের আমি কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে একটু আধটু জানি। কিন্তু আমার জ্বর ঘটালো যে ভাইরাস, সেটা সম্পর্কে আমিতো একেবারেই কিছু জানি না।
-আমিও না।
-তাহলে আংকেল তুমি ওটা সম্পর্কে আমাদের বলো। আমরা ওটা সম্পর্কে জানতে চাই।
-কি জানতে চাও?
-এই যেমন, ওটা কি করে, কি খায়, দেখতে কেমন, কিভাবে মানুষের রোগ বানায় এই সব।
-হুম। তাহলে তো খুবই মজা হয়।
-জ্বি আংকেল প্লিজ বলো। আমিও শুনবো।
-আজ তো বেশি সময় নেই। আজ শুধু তোমাদের কিছু মজার তথ্য দেবো ভাইরাস সম্পর্কে। শোন, এটা হলো সৃষ্টিকর্তার তৈরী এই মহাবিশ্বের অসংখ্য সৃষ্টির মধ্যে অন্যতম ক্ষুদ্র একটি সৃষ্টি। এটা কতটা ক্ষুদ্র তোমরা কি ধারণা করতে পারো?
-নাহ। যত ক্ষুদ্রই হোক, দেখার মতো হলে তো আমি অনেক আগেই দেখতাম।
-আচ্ছা আংকেল, আমাদের ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে কি ওটা দেখা যাবে?
-হা হা হা, ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে? উহু। আচ্ছা, তোমরা তো অনুবীক্ষণ যন্ত্রের কথা –শুনেছো, তাই না?
-কোনটা যেন?
-আরে গাঁধা যেটা দিয়ে অনেক ছোট জিনিস অনেক বড় করে দেখা যায়।
-হ্যা, এবার চিনেছি।
- মজার বিষয় হলো, ভাইরাসকে দেখার জন্য অনেক অনেক শক্তিশালী একটা অনুবীক্ষণ যন্ত্র তোমার দরকার হবে। ভাইরাস হলো অনেকটা এমন, তুমি এই পৃথিবীর তুলনায় যতটা ছোট, একটা ভাইরাস তোমার শরীরের তুলনায় ঠিক ততটাই ছোট। তুমি এই বিশাল পৃথিবীটাকে যত বড় দেখো, ভাইরাস যখন তোমাকে আক্রমন করে, সেও তোমাকে ঠিক ততটাই বিশাল দেখে।
-ইয়া আল্লাহ, কি বলো আংকেল? সত্যি।
-হ্যা, সত্যি।
-আর কি কি করে ওরা?
-উহু। আজ আর বলবো না। বাকিটা আগামী দিন বলবো। তবে শর্ত আছে।
-কেন? কি শর্ত? না না। আজকেই বলো আংকেল, প্লিজ।
-উহু, আগে শর্ত। প্রথম শর্ত, রাহাত ঠিক ঠিক ঔষুধ খাবে এবং বিশ্রাম করবে। নো দুষ্টুমি, নো গেমস। আম্মু যা যা বলবে তাই শুনবে। আর সাইমুম, স্কুলের হোম ওয়ার্ক কোনটা বাদ রাখা চলবে না। তোমার ছোট বোন রাইসাকে একদম বিরক্ত করা যাবে না। মোটেই ওর চুল টানা যাবে না। এখন বলো, তোমরা শর্তে রাজি কিনা? তাহলে কাল থেকে আমরা শুরু করবো ভাইরাসের রাজ্যে আমাদের অভিযান। ভাইরাসের যত বিস্ময়কর কথা, রহস্য আছে, আমরা সেটা আবিস্কার করবো। শুরু হবে আমাদের তিন জনের মিশন, ‘জার্নি টু ভাইরাস’। বলো, তোমরা কি অভিযানের জন্য প্রস্তুত?
-প্রস্তুত।
-উহু, মাই ডিয়ার খুঁদে সায়েন্টিস্টরা। শর্ত মানা হলে তবেই কেবল অভিযার শুরু হবে। আগে নয়।
রাহাতের জন্য গেমস্ খেলতে না পারা ছিল একটা ভয়াবহ ব্যাপার। ওকে খেতে না দিলে ও আপত্তি করবে না, কিন্তু গেমস ছাড়া একটা দিন.....! আর সাইমুম কখনোই ভাবেনি যে ওর জীবনে এমন একটা দিন আসবে যেদিন ও ওর ছোটবোনের চুলে গিট্টু মেরে দিতে পারবে না। ও ভাবতো ও যদি কখনো বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টও হয়ে যায়, তবুও ওর রুটিন ওর্য়াক থেকে এই কাজটা বাদ যাবে না। কিন্তু আংকেল........।
ওদের দু’জনের জন্যই শর্তগুলো ছিলো সাংঘাতিক কঠিন। কিন্তু ওরা রহস্যময় ভাইরাস সম্পর্কে জানার জন্য এতোটাই আগ্রহী ছিলো যে, সেটা আর বলার মত নয়। তাই ওরা আংকেলের শর্তগুলো মানতে তক্ষুণিই রাজি হয়ে গেলো। এই ঘটনা ওদের ক্লাসের বন্ধুরা জানলে কি হবে জানো? বাজি ধরে বলতে পারি, মহাবিজ্ঞানী নিউটনের মাথায় আপেল পড়ার পড় উনি যতটা অবাক হয়েছিলেন, ওরা তার থেকেও বেশি অবাক হবে। যাই হোক, ভাইরাসের রাজ্যে অভিযানে ওরা একপাড়ে খাড়া। হাতের তালুতে কিল মেরে দু’জনেই বল্লো, নো প্রবলেম আংকেল। কাল থেকে শুরু হবে আমাদের অপারেশন, ‘জার্নি টু ভাইরাস’।
Comments
Post a Comment