দু:খিত, ভাস্কর্য নয়- ওটা রোমান দেবী জাস্টিসিয়া
আমরা সমঝোতা নয়, বিভেদ পছন্দ করি। বিভেদ হলেই হবে তর্ক, বিতর্ক- পাওয়া যাবে অন্যের উপরে নিজেকে বড় প্রমাণের সুযোগ। অথবা প্রতিপক্ষের উপর একহাত নেওয়া যাবে। আর অতি বুদ্ধিমানরা বিতর্ক তৈরী করে গোপনে অন্য কোন উদ্দেশ্য আদায় করতে। আর এক শ্রেণীর মানুষ আছে কোন কারণ ছাড়াই অন্যের সাথে ঝামেলা বাঁধাবে- ঝগড়া করবে। জানি না, এমন কারো মাথা থেকেই মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের সামনে নারী মূর্তি স্থাপনের বুদ্ধি বের হয়েছে কিনা!!
ব্যাপারটা চিন্তা করে বলুন তো, যখন কোন ধর্ম- নারীদের মুখ, চেহারা ঢেকে রাখতে বলে, তখন সেই ধর্ম হয়ে যায় গোঁড়া। নারী স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এর দোষে আক্রমণের স্বীকার হয় সে ধর্ম। আবার সেই ধর্মকে নিয়ে কটুক্তিকারীরা যখন নারীর চোখ-মুখ বেঁধে হাতে ধারালো তরবারি আর দাঁড়ি পাল্লা ধরিয়ে দেয় তখন সেটা হয়ে যায় ন্যায় বিচারের প্রতীক!!! এটা কি ডাবল স্টান্ডার্ড হলো না? আবার নারীর হাতে দেওয়া হলো তরবারি!!! স্টেনগান বা বন্দুক থাকলে বুঝতাম আমাদের মহান মুত্তিযুদ্ধের সাহসী যোদ্ধাদের রূপক প্রতিনিধি এই নারী। বুঝলাম তার হাতের দাঁড়িপাল্লা দিয়ে সে ন্যায় বিচার করবে। কিন্তু তরবারি কেনো? তরবারি দেখলে তো হানাহানি-রক্তারক্তির কথা মনে পড়ে। একজন নারী মুখ ঢেকে বের হলে হয়ে যায় সেকেলে, গোঁড়া- আর চোখ বাধা, হাতে তারবারি থাকলে হয়ে যায় ন্যায় বিচারের প্রতীক!!
আমাদের দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ এই মূর্তিকে 'ভাস্কর্য' বলতে পছন্দ করেন। এই 'বিশিষ্ট নাগরিক'দের সংজ্ঞা নতুন করে দেবার প্রয়োজন নাই। বরং একটু দেখি নারীর হাতে তরবারি কোথেকে এবং কিভাবে এলো।
রোমানরা (এদের রাজত্ব ছিলো ৩৭ খিষ্ট্রপূর্ব হতে ৪৭৬ খ্রিষ্ট্রাব্দ) বিশ্বাস করতো তাদের দেবী জাস্টিসিয়া (Iustitia, Justitia or Lady Justice ল্যাটিন Iustitia) তাদের মধ্যে ন্যায় বিচার প্রতিস্থাপন করে। তার হাতের তরবারি দিয়ে তার ক্ষমতা এবং শক্তিমত্তা বোঝায়। সে সর্বশক্তিমানের মতই তার শক্তির বলে সবার উপরে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তাকে বাধা দেবার কেউ নাই। তার হাতের দাঁড়িপাল্লা দিয়ে বোঝায় সমতা এবং স্বচ্ছতা। আর চোখ বাধা কালো কাপড় দিয়ে বোঝানো হয় এই দেবী অর্থ, লোভ, লালসা, ক্ষমতা, বিত্ত, সম্পদ সকল কিছুর উদ্ধে উঠে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে বিচার করে। রোমানদের এই দেবী আবার গ্রীক দেবী থেমিসের সমকক্ষ (গ্রীক সভ্যতা ৮০০ খ্রিষ্টপূর্ব হতে ১৪৬ খ্রিষ্টপূর্ব পর্যন্ত) থেমিস মানে হলো ঐশ্বরিক আইন।
সুতরাং, এই নারী মূর্তি বেসিক্যালি রোমানদের ভূত হতেই এসেছে। বিভিন্ন সময় এই নারী দেবীকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পোষাকে বিভিন্ন আদালত চত্ত্বরে দেখা যায়। কোন কোন পশ্চিমা দেশ আবার একটু বেশি সভ্য, তাই সেখানে এই নারী দেবী পশ্চিমা সভ্যতায় সভ্য হয়ে জামা-কাপড় ছাড়া শোভা পায়। বাঙাল দেশে এসে দেবী হয়েছে বাঙালি। দেবী জাস্টিসিয়া আমাদের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গনে এসে শাড়ি পরে বাঙালি হয়ে গেছে। দেবী দুর্গা, দেবী স্বরস্বতী সাথে সখ্য গড়তে তার বাঙালি সাজা।
আমাদের বিশিষ্ট নাগরিকগণ এটাকে সরাসরি রোমান দেবী জাস্টিসিয়া বা গ্রীম দেবী থেমিস, এস্ট্রিয়া বলতে চান না। তারা ভাস্কর্য বলতে পছন্দ করেন। ভাস্কর্য হলো মূর্তির সভ্য রুপ। ওটাকে দেবী বললে তো লোকে বলবে, তোমরা ইসলামকে সেকেলে বলো- তাহলে রোমান, গ্রীকরাতো তার চেয়েও আদিম আমলের সভ্যতা। ইসলামকে নিয়ে তোমাদের চুলকানি হয়, কিন্তু তারচে' আদিম সভ্যতাকে কিভাবে গ্রহন করো? তারা চালাক-চতুর মানুষ। তারা জানে এসব সভ্যতা ইসলামি সভ্যতার কাছে বহু আগেই পরাজিত হয়েছে। সুতরাং, এসব প্রশ্ন এড়াতে এটাকে ভদ্র ভাষায় ভাস্কর্য বলে ডাকেন। ভাস্কর্য হলো আধুনিক শিল্পচর্চার ব্যাপার। মূর্তি বল্লে তো মোল্লারা ক্ষ্যাপে- ভাস্কর্য - চিত্রকলা তাদের মাথার উপর দিয়ে যাবার জিনিস।
আমাদের সরকারের সাথে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের সংঘাত লাগাতে এসব ভাস্কর্য (মূর্তি (দেবী)) আলাদত প্রাঙ্গন সহ বিভিন্ন জায়গায় স্থাপনের কাজ করছে কিছু লোক। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে আমাদের স্রষ্টা হলেন আল্লাহ এবং নিঁখুত, নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে একমাত্র তিঁনিই সক্ষম। আর কেউ না। আমাদের ক্ষমতাসীন দলের মূলমন্ত্র হলো ‘আল্লাহ সর্বশক্তিমান।’ তার মানে তিঁনিই সকল ক্ষমতা, প্রতিপত্তির প্রতীক যার দ্বারা তিনি ন্যায় বিচার করলে সেটা ঠেকানোর সাধ্য কারো নাই। গ্রীকরা, রোমানরা না হয় আল্লাহকে চিনতো না। যার কারনে ন্যায় বিচারের জন্য তাদের ঐশ্বরিক দেবীর কাছে যেতে হতো। কিন্তু আমরা কোন আক্কেলে এই নারী দেবীকে আল্লাহর সমকক্ষ (নাউযুবিল্লাহ) হিসেবে উপস্থাপন করি? যদি এমন হতো যে এই নারী মূর্তি দিয়ে আমাদের বিচারকদের বোঝানো হচ্ছে যারা এমন বিচার করবেন। নি:সন্দেহে আমরা আমাদের বিচারকদের শ্রদ্ধা করি, মান্য করি এবং ন্যায় বিচারের জন্য তাদের কাছেই যাই। কিন্তু তারাতো ঐশ্বরিক দেবতা, দেবীর প্রতীক হিসেবে নিজেদের দাবী করবেন না। তারা মানুষ এবং তারা মানবিক গুনাবলী, প্রজ্ঞা, জ্ঞানের মাধ্যমেই বিচার কার্য সম্পাদন করেন। আবার আমাদের বিচার ব্যবস্থাও মানুষের তৈরী আইনের মাধ্যমে পরিচালিত। তার মানে পুরো ব্যাপারটার সাথে ঈশ্বর বা এমন কিছুর প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ নাই। সুতরাং, সোজা বাংলা কথায়, মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের সামনে রোমান দেবীর মূর্তি স্থাপন যারাই করেছেন তারাই বোঝাতে চেয়েছেন ‘এখানে দেবী ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেন।’ আমরা মুখে বলছি ‘আল্লাহ সর্বশক্তিমান’ কিন্তু মূর্তিকে সিম্বোলাইজ করে বোঝাতে চাচ্ছি ‘আসলে নিরপক্ষে, সুক্ষ্মাতি-সূক্ষ ন্যায় বিচার করা এবং তাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য রোমান দেবী জাস্টিসিয়াকে দরকার’।
আপনারা আপনাদের ড্রইংরুমে, বেডরুমে, রান্নাঘরে, বাথরুমে যেখানে ইচ্ছা জামাকাপড় পরা- জামাকাপড় ছাড়া পুরুষ ভাস্কর্য, নারী ভাস্কর্য যা ইচ্ছা রেখে দেন, তাতে মানুষের কোন আগ্রহ নাই। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে বিতর্কিত করা কি ঠিক? যারা এই মূর্তি বসিয়েছেন, তারা এই নারী দেবী মূর্তির ইতিহাস জানেন না, এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করেছেন যেন ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকল মানুষের আশ্রয়ের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানের সাথে মানুষের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। যেন সরকারের সাথে সাধারণ মানুষের, হেফাজতের সাথে অহেফাজতের ঝগড়া হয় এটাই তাদের উদ্দেশ্য। ঐ যে বল্লাম, গায়ে পড়ে ঝামেলা না করলে কিছু মানুষের পেটের ভাত হজম হয় না- এরা সেই প্রজাতির মানুষ। আপসোস, এদেরকেই আমরা মাথায় তুলে রাখি। এরাই আমাদের কাছে জাতির স্বঘোষিত বিবেক। এরাই আমাদের বলে ইসলাম সেকেলে। আর তার থেকেও প্রাচীন, ইতিহাসের ধ্বংস্তুপের মধ্যে কংকাল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা রোমানরা-গ্রীকরা-নড়তে চড়তে না পারা মূর্তিরা তাদের কাছে আধুনিক। আপসোস এদের জন্য, বিরাট আপসোস।
ব্যাপারটা চিন্তা করে বলুন তো, যখন কোন ধর্ম- নারীদের মুখ, চেহারা ঢেকে রাখতে বলে, তখন সেই ধর্ম হয়ে যায় গোঁড়া। নারী স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এর দোষে আক্রমণের স্বীকার হয় সে ধর্ম। আবার সেই ধর্মকে নিয়ে কটুক্তিকারীরা যখন নারীর চোখ-মুখ বেঁধে হাতে ধারালো তরবারি আর দাঁড়ি পাল্লা ধরিয়ে দেয় তখন সেটা হয়ে যায় ন্যায় বিচারের প্রতীক!!! এটা কি ডাবল স্টান্ডার্ড হলো না? আবার নারীর হাতে দেওয়া হলো তরবারি!!! স্টেনগান বা বন্দুক থাকলে বুঝতাম আমাদের মহান মুত্তিযুদ্ধের সাহসী যোদ্ধাদের রূপক প্রতিনিধি এই নারী। বুঝলাম তার হাতের দাঁড়িপাল্লা দিয়ে সে ন্যায় বিচার করবে। কিন্তু তরবারি কেনো? তরবারি দেখলে তো হানাহানি-রক্তারক্তির কথা মনে পড়ে। একজন নারী মুখ ঢেকে বের হলে হয়ে যায় সেকেলে, গোঁড়া- আর চোখ বাধা, হাতে তারবারি থাকলে হয়ে যায় ন্যায় বিচারের প্রতীক!!
আমাদের দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ এই মূর্তিকে 'ভাস্কর্য' বলতে পছন্দ করেন। এই 'বিশিষ্ট নাগরিক'দের সংজ্ঞা নতুন করে দেবার প্রয়োজন নাই। বরং একটু দেখি নারীর হাতে তরবারি কোথেকে এবং কিভাবে এলো।
রোমানরা (এদের রাজত্ব ছিলো ৩৭ খিষ্ট্রপূর্ব হতে ৪৭৬ খ্রিষ্ট্রাব্দ) বিশ্বাস করতো তাদের দেবী জাস্টিসিয়া (Iustitia, Justitia or Lady Justice ল্যাটিন Iustitia) তাদের মধ্যে ন্যায় বিচার প্রতিস্থাপন করে। তার হাতের তরবারি দিয়ে তার ক্ষমতা এবং শক্তিমত্তা বোঝায়। সে সর্বশক্তিমানের মতই তার শক্তির বলে সবার উপরে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তাকে বাধা দেবার কেউ নাই। তার হাতের দাঁড়িপাল্লা দিয়ে বোঝায় সমতা এবং স্বচ্ছতা। আর চোখ বাধা কালো কাপড় দিয়ে বোঝানো হয় এই দেবী অর্থ, লোভ, লালসা, ক্ষমতা, বিত্ত, সম্পদ সকল কিছুর উদ্ধে উঠে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে বিচার করে। রোমানদের এই দেবী আবার গ্রীক দেবী থেমিসের সমকক্ষ (গ্রীক সভ্যতা ৮০০ খ্রিষ্টপূর্ব হতে ১৪৬ খ্রিষ্টপূর্ব পর্যন্ত) থেমিস মানে হলো ঐশ্বরিক আইন।
সুতরাং, এই নারী মূর্তি বেসিক্যালি রোমানদের ভূত হতেই এসেছে। বিভিন্ন সময় এই নারী দেবীকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পোষাকে বিভিন্ন আদালত চত্ত্বরে দেখা যায়। কোন কোন পশ্চিমা দেশ আবার একটু বেশি সভ্য, তাই সেখানে এই নারী দেবী পশ্চিমা সভ্যতায় সভ্য হয়ে জামা-কাপড় ছাড়া শোভা পায়। বাঙাল দেশে এসে দেবী হয়েছে বাঙালি। দেবী জাস্টিসিয়া আমাদের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গনে এসে শাড়ি পরে বাঙালি হয়ে গেছে। দেবী দুর্গা, দেবী স্বরস্বতী সাথে সখ্য গড়তে তার বাঙালি সাজা।
আমাদের বিশিষ্ট নাগরিকগণ এটাকে সরাসরি রোমান দেবী জাস্টিসিয়া বা গ্রীম দেবী থেমিস, এস্ট্রিয়া বলতে চান না। তারা ভাস্কর্য বলতে পছন্দ করেন। ভাস্কর্য হলো মূর্তির সভ্য রুপ। ওটাকে দেবী বললে তো লোকে বলবে, তোমরা ইসলামকে সেকেলে বলো- তাহলে রোমান, গ্রীকরাতো তার চেয়েও আদিম আমলের সভ্যতা। ইসলামকে নিয়ে তোমাদের চুলকানি হয়, কিন্তু তারচে' আদিম সভ্যতাকে কিভাবে গ্রহন করো? তারা চালাক-চতুর মানুষ। তারা জানে এসব সভ্যতা ইসলামি সভ্যতার কাছে বহু আগেই পরাজিত হয়েছে। সুতরাং, এসব প্রশ্ন এড়াতে এটাকে ভদ্র ভাষায় ভাস্কর্য বলে ডাকেন। ভাস্কর্য হলো আধুনিক শিল্পচর্চার ব্যাপার। মূর্তি বল্লে তো মোল্লারা ক্ষ্যাপে- ভাস্কর্য - চিত্রকলা তাদের মাথার উপর দিয়ে যাবার জিনিস।
আমাদের সরকারের সাথে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের সংঘাত লাগাতে এসব ভাস্কর্য (মূর্তি (দেবী)) আলাদত প্রাঙ্গন সহ বিভিন্ন জায়গায় স্থাপনের কাজ করছে কিছু লোক। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে আমাদের স্রষ্টা হলেন আল্লাহ এবং নিঁখুত, নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে একমাত্র তিঁনিই সক্ষম। আর কেউ না। আমাদের ক্ষমতাসীন দলের মূলমন্ত্র হলো ‘আল্লাহ সর্বশক্তিমান।’ তার মানে তিঁনিই সকল ক্ষমতা, প্রতিপত্তির প্রতীক যার দ্বারা তিনি ন্যায় বিচার করলে সেটা ঠেকানোর সাধ্য কারো নাই। গ্রীকরা, রোমানরা না হয় আল্লাহকে চিনতো না। যার কারনে ন্যায় বিচারের জন্য তাদের ঐশ্বরিক দেবীর কাছে যেতে হতো। কিন্তু আমরা কোন আক্কেলে এই নারী দেবীকে আল্লাহর সমকক্ষ (নাউযুবিল্লাহ) হিসেবে উপস্থাপন করি? যদি এমন হতো যে এই নারী মূর্তি দিয়ে আমাদের বিচারকদের বোঝানো হচ্ছে যারা এমন বিচার করবেন। নি:সন্দেহে আমরা আমাদের বিচারকদের শ্রদ্ধা করি, মান্য করি এবং ন্যায় বিচারের জন্য তাদের কাছেই যাই। কিন্তু তারাতো ঐশ্বরিক দেবতা, দেবীর প্রতীক হিসেবে নিজেদের দাবী করবেন না। তারা মানুষ এবং তারা মানবিক গুনাবলী, প্রজ্ঞা, জ্ঞানের মাধ্যমেই বিচার কার্য সম্পাদন করেন। আবার আমাদের বিচার ব্যবস্থাও মানুষের তৈরী আইনের মাধ্যমে পরিচালিত। তার মানে পুরো ব্যাপারটার সাথে ঈশ্বর বা এমন কিছুর প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ নাই। সুতরাং, সোজা বাংলা কথায়, মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের সামনে রোমান দেবীর মূর্তি স্থাপন যারাই করেছেন তারাই বোঝাতে চেয়েছেন ‘এখানে দেবী ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেন।’ আমরা মুখে বলছি ‘আল্লাহ সর্বশক্তিমান’ কিন্তু মূর্তিকে সিম্বোলাইজ করে বোঝাতে চাচ্ছি ‘আসলে নিরপক্ষে, সুক্ষ্মাতি-সূক্ষ ন্যায় বিচার করা এবং তাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য রোমান দেবী জাস্টিসিয়াকে দরকার’।
আপনারা আপনাদের ড্রইংরুমে, বেডরুমে, রান্নাঘরে, বাথরুমে যেখানে ইচ্ছা জামাকাপড় পরা- জামাকাপড় ছাড়া পুরুষ ভাস্কর্য, নারী ভাস্কর্য যা ইচ্ছা রেখে দেন, তাতে মানুষের কোন আগ্রহ নাই। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে বিতর্কিত করা কি ঠিক? যারা এই মূর্তি বসিয়েছেন, তারা এই নারী দেবী মূর্তির ইতিহাস জানেন না, এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করেছেন যেন ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকল মানুষের আশ্রয়ের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানের সাথে মানুষের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। যেন সরকারের সাথে সাধারণ মানুষের, হেফাজতের সাথে অহেফাজতের ঝগড়া হয় এটাই তাদের উদ্দেশ্য। ঐ যে বল্লাম, গায়ে পড়ে ঝামেলা না করলে কিছু মানুষের পেটের ভাত হজম হয় না- এরা সেই প্রজাতির মানুষ। আপসোস, এদেরকেই আমরা মাথায় তুলে রাখি। এরাই আমাদের কাছে জাতির স্বঘোষিত বিবেক। এরাই আমাদের বলে ইসলাম সেকেলে। আর তার থেকেও প্রাচীন, ইতিহাসের ধ্বংস্তুপের মধ্যে কংকাল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা রোমানরা-গ্রীকরা-নড়তে চড়তে না পারা মূর্তিরা তাদের কাছে আধুনিক। আপসোস এদের জন্য, বিরাট আপসোস।
আমি এ লেখাটি আপনার নাম দিয়ে আমার ফেসবুকে পাবলিশ্ড করতে চাই। অনুমতির অপেক্ষায়।
ReplyDelete