আপু ঠিকই বলেছেন, কিন্তু.........

আপু ঠিকই বলেছেন। বাংলাদেশের ভার্সিটির চিপায়-চাপায় 'ইয়ে' টাইপের দৃশ্য দেখা যায়। কিন্তু ভদ্র পাশ্চাত্যের কোন দেশের পথে ঘাটে কোন নোংরামি চোখে পড়বে না। সমস্যা হচ্ছে আমেরিকার National Criminal Justice Reference service বলছে ভিন্ন কথা। তাদের মতে.. "Contrary to widespread belief, rape outdoors is rare. Over two thirds of all rapes occur in someone's home. 31% occur in the perpetrators' homes, 27% in the victims' homes and 10% in homes shared by the victim and perpetrator. 7% occur at parties, 7% in vehicles, 4% outdoors and 2% in bars. From 2000 to 2005, 59% of rapes were not reported to law enforcement. One factor relating to this is the misconception that most rapes are committed by strangers. তার মানে যা হয় ঘরের ভেতরেই হয়। আমাদের দেশের ছেলে মেয়েদের পর্যাপ্ত বেড রুম বা লিটনের ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা থাকলে আমরাও চিপা-চাপায় এমন নোংরা/আপত্তিকর দৃশ্য দেখতাম না।



তাই বলে কি আমেরিকাতে নারীর প্রতি সহিংসতা হয় না? National Organization for Women এর মতে '...Despite the fact that advocacy groups like NOW have worked for over three decades to halt the epidemic of gender-based violence and sexual assault, the numbers are still shocking.' আরো আছে। তারা ২০০৬ এর একটা পরিসংখ্যান দেখিয়েছে। সেখানে বলছে, "According to the National Crime Victimization Survey, which includes crimes that were not reported to the police, 232,960 women in the U.S. were raped or sexually assaulted in 2006. That’s more than 600 women every day...........:" সিরিয়াসলি? ৬০০ জন মহিলা প্রতিদিন পুরুষ কর্তৃক নির্যাতিত হচ্ছে? তার পরেও কেন আমরা সাদা চামড়ায় কোন দাগ দেখি না? কারণ তাদের মুক্ত দেশে কারো কিছু করার ইচ্ছা থাকলে যেকোন জায়গায় করতে পারে। ফলে আমাদের দেশের মতো ভার্সিটির চিপা-চাপা, বোটানিক্যাল গার্ডেন খুঁজতে হয় না। তারপরেও তাদের দেশে নারীর প্রতি নির্যাতনের হার এতো বেশি কেনো? ওরাতো আমাদের মতো এতোটা অসভ্য না, তাই না? এই প্রশ্নের উত্তরটা কেউ দিচ্ছে না কেন? ওখানেতো নারীও মুক্ত, পুরুষও মুক্ত, তাহলে জোরাজুরি, নির্যাতন হচ্ছে কেন? এটাই কি পাশ্চাত্যের মেয়েদের নিরাপত্তার আসল চেহারা?


একটা কথা ঠিক যে আমাদের উপমহাদেশে নারীর প্রতি 'ভয়াবহ' নির্যাতনের খবরগুলো বেশি ফলাও হয়। এসিড সন্ত্রাস, আগুনে পোড়ানোর মত বর্বর ঘটনাগুলো প্রায়ই ঘটে। কিন্তু সেটাতো পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতেও ঘটে। তো এই অবস্থায় কোন মেয়ে/মহিলা যদি 'গা ঘেষে দাঁড়াবেন না' বলে, তাতে আপত্তি থাকবে কেনো? যে কোন মেয়েরই অধিকার আছে কোন অপরিচিত/পরিচিত পুরুষকে গা ষেষে না দাঁড়াতে বলার। সমস্যা হচ্ছে ইসলাম প্রসঙ্গ তোলাতে। এটা অনেকেরই সহ্য হয় না। ইসলাম কেনো নারী/পুরুষকে অবাধ মেলা মেশা করতে বাধা দেয় এটাই সমস্যা। অবাধ মেলামেশার বাধাহীন দেশের পরিসংখ্যান তো দেখলাম। মাদ্রাসার শিক্ষক যদি ইসলাম না মানে তো সে পশুর মতো আচরণ করতে পারে। এটাতো ইসলামের দোষ না। মাদ্রাসাগুলোকে আমরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করবো আর সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আধুনিক আচরণ করবে না, এটা কিভাবে প্রত্যাশা করবেন?


আপু কি বলতে চাচ্ছেন যে পাশ্চাত্যের মতো মুক্ত দেশ হয়ে গেলে এমন সহিংসতা কমে যাবে? পাশ্চাত্যের পরিসংখ্যান কিন্তু বলে ভিন্ন কথা। তারপরেও ধরে নেই আমরা পাশ্চাত্যের মতো অবাধ মেলামেশার দাবী করলাম। তখন রাস্তা-ঘাটে আর নারীকে এভাবে সহিংসতার শিকার হতে হবে না। কিন্তু তাওতো আমরা মুক্ত মেলামেশায় অভ্যস্ত হতে পারবো না। কারণ পাশ্চাত্যের যে জিনিসটা নেই তা হলো পরকাল বিশ্বাস। আমরা বিশ্বাস করি ইসলাম অনুযায়ী না চললে আমাদেরকে পরকালে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। কেউ দেখুক বা না দেখুক (পাশ্চাত্যে দেখা যায় না আরকি), আমি যদি কারো প্রতি অবিচার করি, নির্যাতন করি- সেটা কোথাও রিপোর্ট হোক বা না হোক, আল্লাহ তো দেখছেন। অনেকে মনে করেন আমি যাই করি, কেউ না দেখলেতো বেঁচে গেলাম। বাসের মধ্যে আমি চান্সের উপর কোন মেয়ের গায়ে হাত দিলাম। কেউ দেখলো না। মেয়েটিও লজ্জায় কাউকে কিছু বললো না। তাই বলে কি আমি বেঁচে গেলাম? মোটেই না। এমন একজন তো দেখেছেন যিনি শত-কোটি বছর পরে হলেও এর বিচার করবেন। শাস্তি দেবেন। এখানেই ইসলাম ফ্যাক্টর। মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, আমেরিকা, বাংলাদেশ ফ্যাক্টর না। ইসলাম বলছে দূরে থাকো। বিপরীত লিঙ্গের কাছে যেও না। আমরা বলছি 'কাছে আসো, কাছে আসো.......আআআআ'। তো কাছে কি আর একজন আসবে? অনেকেই আসবে। তখনতো বিপত্তি ঘটবেই। ইসলাম মানুষকে জটিলতা থেকে মুক্ত রাখতে চায়। ঝামেলা থেকে বাঁচাতে চায়। কাছে আসতে চাইলে নিয়ম মেনে আসো। গাড়ি লাইনে থাকলে ঠিক থাকবে, বে-লাইনে গেলেই এক্সিডেন্ট হবে। পাশ্চাত্যের ছেলেটি আর সৌদির ছেলেটি মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকাচ্ছে না। তারা বুঝে করুক বা না বুঝে করুক, এটাই ইসলামের বিধান। আমরা তাদের আচরনের প্রসংশা করছি। কিন্তু যখনি বলি ইসলাম মেয়েদের সাথে অবাধ মেলামেশা পছন্দ করে না তখনই ইসলাম হয়ে যাবে ক্ষ্যাত, গোঁড়া, ব্যকডেটেড। যাই হোক, 'গা ঘেষে দাঁড়াবেন না' আন্দোলনকে যেমন শক্তিশালী করা দরকার, তেমনি কোন মেয়ে যেন 'গা ঘেষে দাড়াঁনোর' পরিস্থিতি তৈরী না করে সেটাও বিবেচনায় রাখা উচিত।

সবচেয়ে মারাত্মক misconception হচ্ছে ইসলামের বিধান মেনে চললে নারীরা 'নিরাপদ' থাকবে। এটা অনেকেই বলে। আফগানিস্থান, মধ্যপ্রাচ্য, ফিলিস্থিন ইত্যাদি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে পর্দানশীল নারীরাও কিন্তু নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নিরাপত্তার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারে না। আল্লাহ বা আল্লাহর রাসূল (সা) কি বলেছেন ইসলাম মেনে চললে নিরাপদ থাকা যাবে? বরং তখন পরীক্ষাতো আরো বেশি আসে। তবে ইসলামের বিধান আপনাকে আখেরাতের নিরাপত্তা দেবে, এটা কনর্ফাম। আল্লাহ তা'য়ালা এটার কথাই বলেছেন। দুনিয়ার নিরাপত্তা হোক বা না হোক। এটা সত্য, আপনি অবাধ মেলা-মেশা এড়িয়ে চললে, পর্দার বিধান মেনে চললে অনেক অনেক অনাকাঙ্খিত, অপ্রত্যাশিত ঝামেলা থেকে দূরে থাকতে পারবেন। আর আল্লাহর কাছেতো এসব বিপদ থেকে নিরাপত্তার জন্য দো'য়া করতেই হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের বোনদেরকে, ভাইদেরকেসহ সবাইকে হেফাজত করুন, আমীন।

রেফারেন্স: https://en.wikipedia.org/wiki/Rape_statistics

Comments

Popular posts from this blog

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপানের নীরবতা

রক্ত পরীক্ষা (Blood test) এর অর্থ বুঝুন

Nostro, Vostro এবং Loro account