কাজের বুয়া, সদ্য পাশ করা পোস্ট গ্রাজুয়েট এবং বিদেশি ডিগ্রিধারী ভাই
হিসেব করে দেখলাম, আমাদের বাসায় যে মহিলা কাজ করেন তার প্রতি মাসে আয় কমপক্ষে ১২-১৩ হাজার টাকা। আমাদের বাসাসহ আরো তিন বাসায় কাজ করে তিনি এই টাকা পান। কাজের ক্ষেত্রে তিনি আবার যথেষ্ট প্রফেশনাল। নিদির্ষ্ট তিন কাজের বেশি চার কাজ করবেন না। আবার সেই তিন কাজের কোনটা পরিমানে বেশি হলেও তিনি অসন্তুষ্ট হন। মোদ্দা কথা, এক ঘন্টার মধ্যে কোন রকমে তিনি তার যাবতীয় কাজ শেষ করে নেক্সট অফিসে, সরি নেক্সট বাসায় চলে যান। ওহ, কর্মক্ষেত্র থেকেই তিনি সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, রাতের খাবার যোগার করে নেন। সুতরাং, খাবারের পেছনে আর বাড়তি কোন খরচা করতে হয় না।
এবার আমাদের অফিসে সদ্য মাস্টার্স পাশ করে জয়েন করা এক্সিকিউটিভের হিসেব করলাম। তার মাসিক বেতন ১২ হাজার টাকা। এই টাকায় তিনি ঢাকায় মেসে থাকেন, খাওয়া দাওয়া করেন, অফিসে যাতায়াত করেন, বাড়িতে টাকা পাঠান। মাস শেষে হাতে আদৌ কিছু থাকে কিনা সেই জানে।
বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে দেশে আসা পরিচিত আরেক ভাইয়ের কথা জানি। দেশে এসে তিনি এক এক প্রাইভেট ভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে জয়েন করেছেন ১৫ হাজার টাকায়। এই টাকায় তিনি কিভাবে চলেন সেই হিসেবটা বরং থাক।
বাসায় কাজের মহিলা, সদ্য মাস্টার্স পাস করা এক্সিকিউটিভ আর ডিগ্রিধারী ভাই। মানুষ হিসেবে কাউকে খাটো করছি না। খাটো করছি না সরকারি ঝাড়ুদারকে যে চাকুরিতে যোগদান কালেই বেসিক সহ কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা বেতন পায়। কিন্তু নিজের বিবেকের কাছেই ধাক্কা লাগে, এত্তো এত্তো সার্টিফিকেট, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জন করা ডিগ্রি- এসবের মূল্য কি? হয়ত বলবেন, টাকার অংকে কি আর বিদ্যাকে মাপা যায়? নারে ভাই, যায় না। যায় না বলেই সরকারী অফিসের কেরাণী যখন গাড়ি হাকিয়ে চলে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে তা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে হয়। এটা এক বিপজ্জনক এবং অগ্রহনযোগ্য সামাজিক কাঠামো। একজন পোস্টগ্রাজুয়েটকে এই সামাজিক কাঠামো বাধ্য করছে একজন শ্রমিকের জীবন যাত্রা গ্রহন করতে। আর একজন শ্রমিককে বাধ্য করছে নিজের পেশায় আন্তরিক না হয়ে বিত্তের পেছনে ছুটতে। টাকার মাপে যেখানে মনুষত্ব্য আর নৈতিকতার বিকিকিনি হয়, সেখানে বিদ্যার মূল্য খোঁজা হয়ত বিরাট রকমের বোকামি।
এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে হাজার হাজার গ্রাজুয়েটকে সার্টিফিকেট ধরিয়ে পথে নামিয়ে দেয়া কেন? আমাদের অঞ্চলে একটা কথা আছে। পেটে ভাত নাইতো কি হইছে, ইস্ত্রি করা জামা পরেই সে ঘর থেকে বের হয়। লোকে তো গায়ের জামা আর ঝোলা ভর্তি সার্টিফিকেটই দেখে। সার্টিফিকেট না থাকলে আবার বিয়েও করা যায় না। কন্যার বাবা ছেলের সার্টিফিকেট আর মাসিক ইনকাম জানতে চায়। বেচারাইবা করবে কি??
এই নোংরা সামাজিক কাঠামো আমাদের হাতেই তৈরি। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা পারছে না শ্রমিককে মানুষের মর্যাদা দিয়ে টাকার পেছনে ছোটা থামাতে। পারছে না প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেতনের নূন্যতম কাঠামোর নিয়ম মানাতে। পারছে না তরুণ সমাজকে ঝোলা ভর্তি সার্টিফিকেট অর্জনের বদলে কর্মমুখী শিক্ষা অর্জনে উৎসাহিত করতে। পারছে না মানুষকে টাকার বদলে তার যোগ্যতা দিয়ে মূল্যায়ন করতে। কত কিছুইতো পারছে না। কয়টার কথা বলবো? বলে লাভ আছে? নাই। তাহলে বরং থাক। যা হবার হবে। আমরা সয়ে যাই। দেখতে থাকি। বলতে বলতে মুখ ব্যাথা হলে এমনিতেই একসময় থেমে যাব।
এবার আমাদের অফিসে সদ্য মাস্টার্স পাশ করে জয়েন করা এক্সিকিউটিভের হিসেব করলাম। তার মাসিক বেতন ১২ হাজার টাকা। এই টাকায় তিনি ঢাকায় মেসে থাকেন, খাওয়া দাওয়া করেন, অফিসে যাতায়াত করেন, বাড়িতে টাকা পাঠান। মাস শেষে হাতে আদৌ কিছু থাকে কিনা সেই জানে।
বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে দেশে আসা পরিচিত আরেক ভাইয়ের কথা জানি। দেশে এসে তিনি এক এক প্রাইভেট ভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে জয়েন করেছেন ১৫ হাজার টাকায়। এই টাকায় তিনি কিভাবে চলেন সেই হিসেবটা বরং থাক।
বাসায় কাজের মহিলা, সদ্য মাস্টার্স পাস করা এক্সিকিউটিভ আর ডিগ্রিধারী ভাই। মানুষ হিসেবে কাউকে খাটো করছি না। খাটো করছি না সরকারি ঝাড়ুদারকে যে চাকুরিতে যোগদান কালেই বেসিক সহ কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা বেতন পায়। কিন্তু নিজের বিবেকের কাছেই ধাক্কা লাগে, এত্তো এত্তো সার্টিফিকেট, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জন করা ডিগ্রি- এসবের মূল্য কি? হয়ত বলবেন, টাকার অংকে কি আর বিদ্যাকে মাপা যায়? নারে ভাই, যায় না। যায় না বলেই সরকারী অফিসের কেরাণী যখন গাড়ি হাকিয়ে চলে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে তা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে হয়। এটা এক বিপজ্জনক এবং অগ্রহনযোগ্য সামাজিক কাঠামো। একজন পোস্টগ্রাজুয়েটকে এই সামাজিক কাঠামো বাধ্য করছে একজন শ্রমিকের জীবন যাত্রা গ্রহন করতে। আর একজন শ্রমিককে বাধ্য করছে নিজের পেশায় আন্তরিক না হয়ে বিত্তের পেছনে ছুটতে। টাকার মাপে যেখানে মনুষত্ব্য আর নৈতিকতার বিকিকিনি হয়, সেখানে বিদ্যার মূল্য খোঁজা হয়ত বিরাট রকমের বোকামি।
এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে হাজার হাজার গ্রাজুয়েটকে সার্টিফিকেট ধরিয়ে পথে নামিয়ে দেয়া কেন? আমাদের অঞ্চলে একটা কথা আছে। পেটে ভাত নাইতো কি হইছে, ইস্ত্রি করা জামা পরেই সে ঘর থেকে বের হয়। লোকে তো গায়ের জামা আর ঝোলা ভর্তি সার্টিফিকেটই দেখে। সার্টিফিকেট না থাকলে আবার বিয়েও করা যায় না। কন্যার বাবা ছেলের সার্টিফিকেট আর মাসিক ইনকাম জানতে চায়। বেচারাইবা করবে কি??
এই নোংরা সামাজিক কাঠামো আমাদের হাতেই তৈরি। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা পারছে না শ্রমিককে মানুষের মর্যাদা দিয়ে টাকার পেছনে ছোটা থামাতে। পারছে না প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেতনের নূন্যতম কাঠামোর নিয়ম মানাতে। পারছে না তরুণ সমাজকে ঝোলা ভর্তি সার্টিফিকেট অর্জনের বদলে কর্মমুখী শিক্ষা অর্জনে উৎসাহিত করতে। পারছে না মানুষকে টাকার বদলে তার যোগ্যতা দিয়ে মূল্যায়ন করতে। কত কিছুইতো পারছে না। কয়টার কথা বলবো? বলে লাভ আছে? নাই। তাহলে বরং থাক। যা হবার হবে। আমরা সয়ে যাই। দেখতে থাকি। বলতে বলতে মুখ ব্যাথা হলে এমনিতেই একসময় থেমে যাব।
This comment has been removed by the author.
ReplyDeleteFb te share dewa jay na keno?? chesta korlam pari nai, tmare # dilam
ReplyDeleteyou can copy the link directly and then share.
Delete