আপনার জিনোম থেকেই ঔষুধ বানিয়ে দেবে (?)

সময়টা বিংশ শতাব্দির কোন এক দিন। পড়ন্ত এক বিকেলে মা তার ছোট্ট সোনামনিকে নিয়ে গেলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারকে বললেন তার বাবুটা এই সমস্যা-সেই সমস্যায় ভুগছে। ডাক্তার নিঁখুত হাতে তাকে পরীক্ষা করলেন। মা'কে অভয় দিয়ে বললেন সব ঠিক হয়ে যাবে। এরপর তিনি তার রোগী ছোট্ট বাবুটাকে ল্যাবে নিয়ে তার মুখ থেকে একটুখানি 'লালা' রেখে দিলেন। ফিরে এসে তার মাকে বললেন কয়েকঘন্ট পর নিদির্ষ্ট জায়গা থেকে তার বাবুর ঔষুধ বুঝে নিতে। বাবুটা মায়ের হাত ধরে ফিরে গেলো।
ডাক্তার এই সময়টায় কি করলেন? তিনি শিশুটির 'লালা' নিদিষ্টি ল্যাবে পাঠালেন। সেই ল্যাব সেখান থেকে 'ডিএনএ'  আলাদা করলো। সেই ডিএনএ'র সিকোয়েন্স মেইল করে পাঠিয়ে দিলো কোন এক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির প্লান্টে যেখানে তারা 'জিনোম বেইজড' ঔষুধ বানায়। তারা সেই ছোট্ট শিশুর ডিএনএ এ্যানালাইসিস করে সেই অনুযায়ী ঔষুধগুলো বানিয়ে দিলো। কাজগুলো করা হলো আর্টিফিসিয়াল ইনটিলিজেন্স ভিত্তিক রোবট এর মাধ্যমে। শিশুটির জন্য এই তৈরী করা ঔষুধগুলো পুরোপুরি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত, নিরাপদ কারণ এগুলো তৈরী হয়েছে তার নিজের জিনোম এর ভিত্তি করে।
আমি এখানে আসলে ছোট্ট একটা গল্প ফেঁদেছি। ফিকশন হিসেবে এটাকে চালিয়ে দেয়া যায় কারণ এই সময়টায় বসে এমন একটা ঘটনা কল্পনা করা একটু কঠিন। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি সেই সময় দূরে নয় যখন প্রতিটি রোগীকে তার নিজের দেহের উপযোগী সর্ম্পূণ নিরাপদ ঔষুধ তৈরী করে দেয়া হবে। আমরা এখন এই প্রযুক্তিকে বলি 'জিনোম বেইজড মেডিসিন।' এর ফলে রোগী তার নিজের জিনোম ভেরিয়েশনের কারণে ঔষুধের যে বিষক্রিয়া বা পাশ্বপ্রতিক্রিয়াতে ভোগার সম্ভাবনা থাকতো, তা আর থাকবে না। তার জন্য তৈরী করা প্রতিটি ঔষুধই হবে তার একান্ত নিজের জন্য যা অন্য কারো জন্য খাটবে না। ভাবতেই বেশ 'শিহরণ' হচ্ছে, তাই না?

Comments

Popular posts from this blog

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপানের নীরবতা

রক্ত পরীক্ষা (Blood test) এর অর্থ বুঝুন

Nostro, Vostro এবং Loro account