Posts

Showing posts from October, 2011

জীবনের সূচনা

একদম নিরব।এতটুকু শব্দ বা আলো কিছুই ছিলনা।।কেবলি অনন্ত নিশ্চুপতায় ঘেরা ছিল এই মহাবিশ্ব। কোথাও ছিলনা প্রাণের এতটুকু উপস্থিতি। চারিদিকে কেবল অসীম নিরবতা। প্রাণ নেই,প্রাণী নেই, বস্তু নেই, কেবলি আধাঁর ছিল বাস্তব। বাকি সব মিছে। সেই সময়ের কথা বলছি। যখন আসলে সময়ের শুরুই হয়নি। শুরু হবে কি করে? কিছুইতো ছিলনা। তখনি কোনো মহাসত্তায় বুঝি খেলে গেলো কোনো মহাপরিকল্পনার চিন্তা। বুঝিবা ইচ্ছা করলেন নিজের প্র্রকাশের।ছড়িয়ে থাকা বিশাল ধূলির স্তুপে শুরু হলো আলোড়ন। সংকুচিত হতে শুরু করলো তারা। হতে থাকলো ক্ষুদ্র। ক্ষুদ্র হতে আরো ক্ষুদ্র। থামলো অতি ছোট এক বিন্দুতে পরিণত হয়ে। এরপর সে বিন্দুতে এলো শিহরন। যেন কোন মহাশক্তি সেখানে আঘাত করলো। প্রচন্ড বিস্ফোরনের মতো তারা ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। আত্নকেন্দ্রিক কোন পরিবার যেন হঠাৎ করে একে অপরের শত্রু হয়ে গেলো।সরে যেতে লাগলো পরস্পর হতে যতটা পারা যায়। বিংশ শতকে বিজ্ঞানের রাজপূত্র হকিং বললেন, এ ছিল মহাবিস্ফোরন। বিগ ব্যংগ। তাও ছয় মিলিয়ন বছর আগের কথা। একত্রিত আকাশ ও পৃথিবীগুলো আলাদা হলো। দিন যেতে লাগলো। তারা যার যার স্থানে স্থির হলো। তৈরী হলো নীহারিকা, গ্যলাক্সী, সৌরজ

পারমানবিক গল্প: ৫

লোকটি প্রায়ই মসজিদের খুঁটির সাথে বসে থাকতো। কোথা হতে এসেছে পাড়ার কেউ জানেনা। পরিচিত একটি থালা আর পুরোনা পান্জাবিতে তাকে প্রায় সবাই চিনতো। চেনার কারণ হলো তাকে সবাই ভিক্ষা করতে দেখতো কিন্তু ভিক্ষুক বলে বিশ্বাস করতো না। একটু অন্যরকম মানুষটা একদিন যেমন হঠাৎ করে এসেছিল, তেমনি একদিন হঠাৎ করেই চলে গেল। ঘুষ দিতে রাজি ছিল না বলে সারা জীবন প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করে শেষ বয়সে পেনশন আর ভাগ্যে জোটেনি। কি জানি, যে ঘুষ চেয়েছিল সে তারই হাতে গড়া কোন 'মানুষ' কিনা কে জানে? (১৪.০৬.২০১১)

পারমানবিক গল্প: ৬

বাজার থেকে কিনে আনা মুরগিটার গলায় ছুরি চালাতে গিয়ে তিনি আৎকে উঠলেন। এমনিতে তিনি বেশ শক্ত-পোক্ত মানুষ। নিয়মিত ব্যায়াম করেন। সহজে কিছুতে ভয় পাননা। কিন্তু আজকের ব্যাপারটা ভিন্ন। সকালে পত্রিকা পড়ছিলেন। রাষ্ট্রপতি একজন খুনিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। পত্রিকায় এ ঘটনার সাথে সাথে খুনি কিভাবে খুনটি করেছিল সে বর্ণনাও দিয়েছে। একজন সরকার দলীয় নেতার ছেলে বিরোধী দলীয় আরেক নেতাকে অপহরণ করে। অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার হাতটি কেটে দেয়। সে অবস্থায় সারা রাত ফেলে রাখে। পরের দিন মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাবার সময় গাড়ির ভেতরেই তাকে জবাই করে। এরপর টুকরো টুকরো করে লাশটি নদীতে ফেলে দেয়। ওফ্.........পত্রিকার সে দৃশ্যটি মাথার ভেতর যেন তিনি জীবন্ত দেখতে পাচ্ছেন। ছটফট করতে থাকা রক্তাক্ত জবাই করা মানুষটার প্রাণহীন দুটি চোখ। নাহ....... তার পক্ষে আর এ মুরগিটাকে জবাই করা সম্ভব নয়। কাপঁতে কাপঁতে বের হয়ে এলেন। হঠাৎ করেই তার মনে হলো, আমি যদি ঐ বোবা মুরগিটি হতাম, তাহলে অন্তত নিজেকে আর মানুষ বলে পরিচয় দিতে হতোনা।

কতদিন হয়না যাওয়া

কতদিন হয়না যাওয়া আমার গায়েঁর বাড়ি, কতদিন হয়না দেখা বাশঁ বাগানের সারি। কতদিন হয়না দেখা মাকে...... অবাধে সাঁতার কাটা পদ্মা নদীর বাকে। 'জানিনা মৌমাছি কি বসে লেবুর ফুলে, ভাটি গান, বৈঠা বাওয়া গেছি নাকি ভুলে।'  দেখিনা কাশেঁর ফুল আর শাখে...... জোৎস্না এখনকি মায়ার ছবি আকেঁ? নাটায়ের সুতা আমার এখনো কি আছে? হলদে বুকে সবুজ সর্ষে গুলি হাসে। আসেনা ঘুম যে আমার চোখে.........

ডারপার গল্প

অক্টোবর ৪, ১৯৫৭. ঘড়ির কাটায় সময় ১৯ টা বেজে ২৮ মিনিট। সোভিয়েত ইউনিয়নের তুরানতামে জড় হয়েছে বেশ কিছু উৎসাহী মানুষ। উৎকন্ঠার সাথে ঘড়ির কাটা গুনছে। আর রেডিওতে কান পেতে আছে পুরো জাতি। থাকবেনা কেন? এ যে পুরো জাতির সম্মান আর মর্যাদার প্রশ্ন। অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হলো। পুরো স্পেস সেন্টার জুড়ে আলোর স্ফূলিঙ্গ ছুটে গেলো। মাটির বুক ছেড়ে শূণ্যে যাত্রা শুরু করলো স্পূটনিক-১. সেকি আবেগ আর আনন্দের বন্যা। এবার বুজি সোভিয়েতদের আকাশ জয়ের স্বপ্নও বাস্তব হতে চললো। হোকনা স্পুটনিক-১ কেবল পৃথিবীকে প্রদক্ষিণকারী একটি আবহাওয়া স্যাটেলাইট, তাতে কি। আকাশের বুকে তো তারাই প্রথম স্বগর্বে তাদের উপস্থিতি ঘোষনা করলো। ভদকার স্রোতে ভেসে গেলো স্টালিনগ্র্রাদ। উল্লাসে ফেটে পড়লো সোভিয়েতরা। কিন্তু ঠিক বিপরীত চিত্র আটলান্টিকের অপর পাড়ে। স্নায়ূ-যুদ্ধের আরেক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র স্পূটনিক-১ এর আকাশ ভ্রমনকে নিলো ঠিক উল্টোভাবে। স্পূটনিক-১ এর উর্ধ্বগমন যুক্তরাষ্ট্রকে যেন নিম্নে  পাঠিয়ে দিল। এবার বুজি আকাশে তাদের প্রতিপক্ষ তাদের জন্য শক্ত চ্যালেন্জ হয়ে দাড়ালো। আসলে এটি ছিল সোভিয়েত এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্য

হকিং এর ঈশ্বর আর আমার মন

স্টিফেন ডব্লিউ. হকিং। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় বিজ্ঞানী। মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে তার মন্তব্য তাকে পরিচিত করেছে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে। মোটর নিউরন ডিজিজে ভোগা এই বিজ্ঞানীর জগৎ একটা হুইল চেয়ারে আবদ্ধ। কিন্তু তিনি তার চিন্তার জগৎকে ছড়িয়ে দিয়েছেন এই মহাবিশ্বের দূরতম অঞ্চলে, মহাবিশ্বের গভীরতা মাপতে। চমৎকার এবং সহজবোদ্ধভাবে মহাবিশ্বের সূচনা, ব্যপ্তি, পরিণতির মতো কঠিন বিষয়গুলো মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি মিডিয়ার আলোচনায় আসেন, তার রেকর্ড সংখ্যাক বিক্রীত বই ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’ এর মাধ্যমে। এই বই তাকে আলোচনায় ও সমালোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে। এই বইতে তার সবচেয়ে জনপ্রিয় উক্তি ছিল, তিনি ঈশ্বরের মন বুঝার চেষ্টা করছেন। আবারো তিনি উঠে আসেন আলোচনার কেন্দ্রে তার নতুন বই “গ্রান্ড ডিজাইনের” মাধ্যমে। এখানে তিনি বলার চেষ্টা করেছেন, এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে শূন্য থেকে এবং তার জন্য কোন স্রষ্টার প্রয়োজন নেই। প্রচন্ড তর্ক-বিতর্কের ঝড় ওঠে তার নতুন মন্তব্যে। মানুষকে বাধ্যকরে নতুন করে হকিংকে ভাবতে এবং তার পূর্বের তত্ত্বের ভিত্তিতে নতুন তত্ত্বকে যাচাই করতে। সেই প্রেক্ষিতে এই প্রবদ্ধ। এখান

জার্নি টু ভাইরাস: পর্ব ০২

ভাইরাস কিন্তু কোন ইংরেজি শব্দ নয়। এটি একটি ল্যাটিন শব্দ এসেছে ল্যাটিন ভাষা হতে। ল্যাটিন ভাষা অনেক পুরাতন একটি ভাষা। প্রাচীন রোম এবং ল্যাটিয়ানরা এ ভাষা ব্যবহার করতো। তোমরা তো জান আমাদের বিজ্ঞানের অনেক অনেক শব্দ এসেছে ল্যাটিন ভাষা হতে। ল্যাটিন ভাষায় ‘ভাইরাস’ মানে হলো ‘বিষাক্ত তরল’... নাম থেকেই তো বোঝা যাচ্ছে যে এরা আসলে খুব সুবিধার জিনিস না। যাই হোক। আমরা যেহেতু ভাইরাসের রাজ্যে আমাদের যাত্রা শুরু করেছি তাই প্রথমেই আমরা জানবো কিভাবে এই ভাইরাস আবিস্কার হলো। পুরো রুমের সবাই একেবারে চুপ। এটা হচ্ছে পরের দিনের কথা। ডাক্তার আংকেল তার কথা মত পরের দিন রাহাতকে দেখতে এলেন। রাহাত এবং সাইমুম তাদের আরো কয়েকজন বন্ধুকে তাদের জার্নি টু ভাইরাসের কথা বলেছে। ওরা তো শুনে একপায়ে দাঁড়িয়ে গেলো এটা শোনার জন্য। আসলে কেউ কিন্তু একপায়ে দাঁড়াতে পারে না। কিন্তু রাহাত আর সাইমুমের কাছে ভাইরাসের গল্প শুনে ওরাও শোনার জন্য এতোটা আগ্রহী হলো যে তক্ষুনী তক্ষুনী সবাই দাঁড়িয়ে গেলো। কথা মত পরের দিন তালহা, জুবায়ের, ফারদিন, জাওয়াদ, মুজাহিদ, ফিরোজ, হাসিব এক্কেবারে সময়মত রাহাতদের বাসায় চলে এলো। রাহাততো খুব অবাক। ওর

জার্নি টু ভাইরাস: পর্ব ০১

‘নাহ্। আজ আংকেলকে জিজ্ঞেস করতেই হবে। না হলে যে আমার পেটের ভাত হজমই হবে না’। আসলেই রাহাতের পেটের ভাত হজম হচ্ছে না। ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে বেচারা বিরাট কষ্টে আছে। ওর আসলে এ ব্যাপারে তেমন কোন দোষ নেই। যত ভজঘটের শুরু ‘কিন্তু’ থেকে আর এ সবের জন্য দায়ী ওর গোবেচারা বৈজ্ঞানিক মনটা। আসে পাশে কিছু ঘটলেই হলো! রাহাত সে ঘটনার হাড়িঁর ভেতর না যাওয়া পর্যণ্ত স্বস্থি পায় না। ‘কিন্তু’ সেটা কেন হলো, ‘কিন্তু’ কি করে হলো, ‘কিন্তু’ এভাবে না হয়ে ওভাবে হলো না কেন? যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন উত্তরে খুশি হয়, ততক্ষণ এই রকম হাজার প্রশ্ন করতেই থাকবে। কিন্তু রাহাতের বাসায় রাহাতের অবস্থা হলো ইয়া বড় ট্রাকের মতো। মানে ট্রাকের পেছনটায় দেখেছো না যেমন লেখা থাকে, ‘নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করুন’। তেমনি রাহাতকে দেখলে ওর ভাইয়া, আপু, আব্বু-আম্মু ওর প্রশ্নের ভয়ে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে। অবশ্য রাহাত এতে মোটেই হতাশ হয় না। ইতিমধ্যে ক্লাসে ও খুঁদে সায়েন্টিস্ট নামে খ্যাত হয়ে গেছে। আর ওদিকে যত ঝামেলা হলো আমার। ও যত এক্সপেরিমেন্ট করে তার প্রথম শিকার হই আমি। ওর প্রশ্ন আর উত্তর দু’টোই আমাকে শুনতে হয়। অবশ্য বিজ্ঞান আমার কাছেও খুব মজার